ভাল বন্ধু হওয়ার উপায়

ভাল বন্ধু হওয়ার উপায় জেনে নিন | Best friend

ভাল বন্ধু হওয়ার উপায় কি? বন্ধুত্ব হাঁরায় না, শক্তির নিত্যতা সূত্রের মত এক হৃদয় থেকে অন্য হৃদয়ে রুপান্তর হয় মাত্র। মানুষের জীবনে বন্ধুর অভাব নেই কিন্তু ভাল বন্ধুত্বের অভাবে বেশিরভাগই ভুগে। এই জাতীয় সমস্যা নিরসনে আজকের এই আয়োজন। সমাধান দেয়ার চেষ্টা করব-

(i) ডেল কার্নেগীর বই – “How to win friends”
(ii) লেইল লন্ডিয়েস এর বই – “How to talk to anyone”
(iii) নিকোলাস বুধমান এর বই – “How to make people like you” থেকে।

বেস্ট ফ্রেন্ড হওয়ার সব গুণ আপনার মাঝে আছে শুধু আমি যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব সেগুলো বাস্তবে এপ্লাই করার অনুরোধ রইল। আমার পক্ষ থেকে গ্যারান্টি রইল ভাল বন্ধুর ট্যাগ পাওয়ার। চলুন তবে শুরু করা যাক-

মুখভঙ্গি

মৃদু হাসি আপনার ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে, সামনের জনের জড়তা কাটার উত্তম উপায় এবং আপনি যে খোলা মনের মানুষ তা সে ধরে নেয়।

চোখে চোখ রেখে কথা

কথা বলার সময় অবশ্যই সামনের জনের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে হবে। এতে সে বুঝবে যে, আপনি তাকে গুরুত্ব ও মনোযোগ দিচ্ছেন এবং এতে আপনার মনোযোগও ঠিক থাকবে।

বন্ধুত্বের বন্ধন

সামনের জন যদি ধীরে কথা বলে তবে আপনিও ধিরে কথা বলবেন। এতে সে ভাববে আপনি তার মতোই এবং অতি সহজে তার আপন হয়ে যাবেন।

নাম ধরে ডাকা

ডেল কার্নেগি বলেছেন – একজন ব্যক্তির জন্য সবচেয়ে মিষ্টি ও গুরুত্বপূর্ণ শব্দ হল তার নাম। Hi/ Hello এর সময় অপরজনের নাম ধরে পরিচিত হবেন। এতে আপনার নাম মনে রাখার ক্ষমতাও বাড়বে।

আর অপরজনও খুশি হবে, ভাববে আপনি তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। যেমনঃ সামনের জন যদি বলে Hi আমি আকাশ, তাহলে আপনি বলবেন Hello আকাশ, আমি সৌরভ। তারপর যতগুলো কথা আপনাদের মাঝে হবে, কথার মাঝে চেষ্টা করবেন নাম ধরে ডাকার। যেমনঃ আকাশ তোমার বাসা কোথায়? আকাশ তোমার পছন্দের খাবার কি? ইত্যাদি।

ড্রেসাপ

পরিচয় পর্বে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনার ড্রেসাপ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক আপনাকে আকর্ষণীয় করে তোলে। শরীর থেকে যাতে কোন রকম দূর্গন্ধ বের না হয় এজন্য সর্বদা ফ্রেশ থাকার চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি ভাল সুগন্ধির পারফিউম ব্যবহার করতে পারেন।

ভালো শ্রোতা হোন

ভাল শ্রোতা হোন-সবাই চায় তার কথা কেউ মনোযোগ দিয়ে শুনুক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা যে ভুলটা করি তা হল কথার মাঝে নিজের কথা বলা।

বন্ধুত্ব নিয়ে কিছু কথা

যেমনঃ আপনার বন্ধু গত মাসে বইমেলায় যাওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করছে, এখন আপনি তার কথা মন দিয়ে শুনবেন। তার কথা শেষে আপনার যদি কোন অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তা শেয়ার করবেন। আপনি একজন ভাল শ্রোতা হন এটা শুধু আপনার বন্ধু নয় গালফ্রেণ্ড কিংবা স্ত্রী সবাই চায়।

তর্ক করবেন না

যে তর্কের কোন সমাধান নেই, সেই বিতর্কে না যাওয়াই ভাল। রাজনৈতিক অনেক বিষয় আছে, যেগুলোর তর্কের কোন সমাধান নেই। আবার আপনার বন্ধু একটি অংক সমাধান করেছে এক নিয়মে, আপনি করেছেন আরেক নিয়মে।

এক্ষেত্রে তারটা ভুল আপনারটা সঠিক এ নিয়ে কোন বিতর্কে যাবেন না বরং তাকে উৎসাহিত করবেন। অর্থাৎ বন্ধু কিংবা সঙ্গীর সাথে এমন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনায় যাবেন না যেটা রাগারাগি বা অভিমানের পর্যায়ে যায়।

অনুপ্রেরণা দিন সবসময়

কনফিডেন্স ধরে রাখার জন্য মোটিভেশন এর কোন বিকল্প নেই। খারাপ রেজাল্ট কিংবা সম্পর্ক ব্রেকাপের পর বন্ধু যখন অনেক হতাশ হয়ে পড়ে, তখন সুযোগ আপনার বন্ধুত্বের সম্পর্কটাকে অনেক দূরে নিয়ে যাওয়ার।

 বন্ধু চেনার উপায়

বন্ধুকে সবসময় পজিটিভ কথা বলেন, তার দুঃখ কষ্ট গুলো মনোযোগ দিয়ে শুনেন। কি করলে তার মন ভাল হবে সেটা করার চেষ্টা করেন। বেশিরভাগই এই সময়টাতে বন্ধুর পাশে থাকে না, যারা থাকতে পারে তারাই আসলে বেস্ট ফ্রেণ্ড হয়ে যায়।

ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলাবেন না

আপনি যত ভাল বন্ধুই হন না কেন, আপনার বন্ধুকে কখনই জোর করবেন না তার প্রাইভেট বিষয়গুলো শোনার জন্য। যদি সে নিজে থেকে বলতে চায়, তবুও খুব জরুরী না হলে না শোনাই ভাল । কারণ, তার প্রাইভেসি কোনভাবে লিগ হলে তার দায়ভার আপনারই উপর এসে পড়বে। “সম্পর্ক ভালো রাখার উপায়” গুলোর মধ্যে এটিকে বেশি গুরুত্ব দিন।

টিটকারি করবেন না

হাস্যকর কোন ঘটনা যেটাতে আপনি হয়তো মজা পাবেন, কিন্তু আপনার বন্ধু মোটেও খুশি হবে না। এরকম কাজ থেকে বিরত থাকুন। ক্লাসে পড়া না পারলে বা এমন কোন অবাঞ্চিত ঘটনা যেমনঃ আপনার বন্ধু হঠাৎ পিছলায় পড়লো , এতে আশেপাশের সবাই হাসবে।

বন্ধুত্ব কেমন হওয়া উচিত

কিন্তু ঠিক ওই মুহূর্তে তার পাশে গিয়ে দাঁড়ান, আর পজিটিভলি বলেন, ইস! ব্যথা পেয়েছিস তাই না, আমিও না তোর মত একবার পড়ে গিয়েছিলাম, বেশ ব্যথাও পেয়েছিলাম। বিশ্বাস করেন, আপনার প্রতি তার আকর্ষণ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

ফানি হোন

ফান কার না ভাল লাগে। আপনার বন্ধুকে সর্বদা মজার কোন গল্প বা জোকস বলেন। এতে আপনার প্রতি তার একটা দূর্বলতা কাজ করবে। তবে অতিরিক্ত কিছু নয়, অবশ্যই পরিবেশ পরিস্থিতি দেখে ফান করবেন।

সম্মান দিন

সম্মান পেতে হলে আগে সম্মান দিতে হয়। এটা আমাদের সবার জানা। কিন্তু কেউ মানি আর কেউ মানি না। যিনি মানতে পেরেছেন, তিনি সমাজের মর্যাদাবান ব্যক্তি। তাই শুধু অফিসে নয়, সব জায়গায় ছোট বড় সবাইকে প্রাধান্য দেওয়াই হোক আপনার ব্যক্তিত্বের প্রধান পরিচয়।

ছাড় দিন

বিষয়টি অনেক জরুরী ভালো সম্পর্কের জন্য। যেমনঃ দোকানের একটি মাত্র শার্ট আপনি ও আপনার বন্ধু দুজনেই পছন্দ করেছেন নেওয়ার জন্য। এক্ষেত্রে আপনি তাকেই দিয়ে দিবেন। এতে করে সে আপনার প্রতি দুর্বল হয়ে পরবে।

গোয়েন্দা হোন

যার কাছে আপনি আকষর্ণীয় হতে চাচ্ছেন, তার বিষয় গুলো যেমনঃ- ভাল লাগা , মন্দ লাগা , পছন্দের জিনিসগুলো তার মাধ্যমে কিংবা অন্য কারো মাধ্যমে জেনে নিন, আর সে হিসেবে কাজ করার চেষ্টা করুন। তারপর ম্যাজিকীয় ফলাফলটা আপনি নিজের চোখেই দেখতে পাবেন। ভাল বন্ধু হওয়ার সবচেয়ে ভাল উপায় এটি।

আপনার ধারণা আরেকটু ভালভাবে ক্লিয়ার করার জন্য আমি একটি ভিডিও বানিয়েছি। একবার হলেও মনযোগ দিয়ে দেখুন। এই ভিডিওতে শুধু বন্ধু নয় সাথে ভালবাসার মানুষ ও অফিসের কলিগের কাছে কিভাবে আকর্ষণীয় হওয়া যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।


আশা করি আমাদের এই ভিডিও ও লেখা আপনাদের ভাল লেগেছে। আপনার বন্ধুদের মাঝেও শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন।

আরো পড়ুন- মেয়েরা কেমন ছেলে পছন্দ করে জীবন সঙ্গীর জন্য

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *