আলিবাবা আমাজন জীবনী

আলিবাবা আমাজন জীবনী আপনাকে সফল বিজনেস প্ল্যান দেখাবে

আলিবাবা আমাজন জীবনী: আজ আমরা পৃথিবীকে রাজত্ব করা দুইটি বড় কোম্পানি আলিবাবা আর আমাজন ডট কমকে জানি। কিন্তু কিভাবে এই দুই কোম্পানি এত বড় জায়গায় এল? কতটা ত্যাগ আর কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে তাদের আমরা কি তা জানি। যারা বিজনেস বা মার্কেটিং করতে গিয়ে আশা হারিয়ে ফেলেন, ব্যর্থ হয়ে হতাশ হয়ে যান তাঁরা আজকে অনেক বড় অনুপ্রেরণা পেতে যাচ্ছেন।

জ্যাক মার জীবনী ও সংগ্রাম

যদি তুমি আশাহত না হও, তোমার একটা সুযোগ থাকবে, আশা হারানো হচ্ছে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। ছাত্র হিসেবে মোটেও ভাল ছিলাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরিক্ষায় তিনবার ফেল, চাকরির জন্য পরিক্ষা দিয়ে ৩০ বার ব্যর্থ হয়েছি আমি। চীনে যখন কেএফসি আসে তখন ২৪ জন চাকরির জন্য আবেদন করে৷ এর মধ্যে ২৩ জনের চাকরি হয়৷ শুধুমাত্র একজন বাদ পড়ে, আর সেই ব্যক্তিটি আমি৷

জ্যাক মার জীবনী
জ্যাক মা

এমনও দেখা গেছে চাকরির জন্য পাঁচ জন আবেদন করেছে তন্মধ্যে চার জনের চাকরি হয়েছে বাদ পড়েছি শুধুই আমি৷ পুলিশের চাকরির জন্য আবেদন করেছিলাম, কিন্তু সেখান থেকেও নাকচ করে দেওয়া হয়। প্রত্যাখ্যানের পর প্রত্যাখ্যানই দেখেছি আমি৷ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ১০বার আবেদন করে ১০বারই প্রত্যাখ্যাত হয়েছি৷

শেষ পর্যন্ত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী পড়ানো শুরু করি। যেখানে মাসে মাত্র ১২ ডলার বেতন পেতাম। আমেরিকান টিভি-হোস্ট চার্লি রোজের কাছে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই কথাগুলো বলেন চায়নার বিখ্যাত ই-কমার্স সাইট আলিবাবা এর মালিক জ্যাক মা । তিনি ১৯৬৪ সালে পশ্চিম চীনের হোয়াং ঝু প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। পিতামাতার তিন সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়৷ তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব ভাল ছিল না।

জ্যাক মার হাত ধরে আলিবাবার শুরু

নিজের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য জ্যাক মা নতুন একটি কোম্পানি খুলে বসলেন। একটি ওয়েবসাইট নির্মাণ করে রপ্তানিমুখী চীনা কোম্পানিগুলোর তথ্য প্রকাশ করতে শুরু করলেন। জ্যাক মার ওই ওয়েবসাইটটিকে বলা হয় চীনের প্রথম ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ওই ওয়েবসাইটটি ব্যবসায় করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়।

এরপর তিনি যখন প্রথম আলিবাবা প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন, তখন তার ১৭ জন বন্ধুকে বাসায় ডাকেন। তাদের সঙ্গে তিনি তার আইডিয়ার কথা শেয়ার করেন। কিন্তু সবাই তার এই আইডিয়াকে ‘স্টূপিড আইডিয়া’ বলে চলে যায়। পুরো রাতজুড়ে জ্যাক মা তার উদ্যোগের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করেন এবং পরেরদিন তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে অন্যরা যাই বলুক, তিনি এই কাজটি করবেনই৷ টাইম ম্যাগাজিনে জ্যাক মা কে পাগল জ্যাক বলে অভিহিত করেছিল৷ কিন্তু তিনি আশাহত হন নি৷ তিনি চলেছেন আপন গতিতেই৷

অবশেষে তিনি আলিবাবা নামক ই-কমার্স সাইটি প্রতিষ্ঠা করতে সফল হন এবং ব্যবসায় সফলতার মূলমন্ত্র অনুসরণ করায় আলিবাবার এখন মোট সম্পদের পরিমাণ ১৬০ বিলিয়ন ডলারে দাড়িয়েছে। এই বাণিজ্যের ওপর ভিত্তি করেই জ্যাক চীনের সবচেয়ে বড় ধনী হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।

ফোবর্স ম্যাগাজিনের হিসেবে জ্যাক মা পৃথিবীর ৩৩ তম ধনী ব্যক্তি৷ তার মোট সম্পদের পরিমাণ ২১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার৷ জ্যাক মার জীবনে এতবার ব্যর্থ হওয়ার পরও বড় হওয়ার, প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আশা থেকে বিন্দু মাত্র পিছপা হন নি৷ অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে তিনি আজকের অবস্থানে এসেছেন৷

যেই জ্যাক মা চাকরির জন্য ৩০ বার প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন সেই জ্যাক মার প্রতিষ্ঠান Alibaba ডটকম চীনে নতুন করে ১৪ মিলিয়ন চাকরি তৈরি করেছে৷

জেফ বেজোসের জীবনী

আগামীকাল থেকে তোমাদের নতুন জীবনের যাত্রা শুরু হবে, যে জীবনের রচয়িতা তুমি নিজে। তোমার বয়স যখন ৮০ বছরের মতো হবে, একটা নীরব মুহূর্তে তুমি তোমার জীবনের প্রতিচ্ছবি তোমার সামনে দেখবে।

জেফ বেজোসের জীবনী
জেফ বেজোস

তোমার নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোকেই সবচেয়ে অর্থপূর্ণ মনে হবে। আমরা হচ্ছি আমাদের সিদ্ধান্তেরই প্রতিফলন। নিজেই নিজের মহৎ গল্প তৈরি করো। যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এ বক্তব্য দিয়েছিলেন Amazon এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেফ বেজস।

জেফ বেজস এর জন্ম হয়েছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক মায়ের কোলে। যখন বেজস এর বয়স মাত্র আঠারো মাস তখন তার পিতা তার মাকে নিঃস্ব অবস্থায় ছেড়ে চলে যায়। অতঃপর বেজস সৎ পিতার ছত্রছায়ায় পড়ালেখা করেন, নানার বাড়িতে থেকে প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করেন।

জেফ বেজোসের হাত ধরে আমাজন ডট কম

আকর্ষণীয় চাকুরি ছেড়ে তিনি অনলাইন ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন এবং অ্যামাজন ডট কম প্রতিষ্ঠা করেন। মাত্র ৩ জন কর্মচারী নিয়ে শুরু করা অনলাইন ভিত্তিক তার এই ব্যবসায় বর্তমানে প্রায় ২ লক্ষ লোক কর্মরত আছে!

বেজস তার গ্যারেজে অ্যামাজন ডট কম স্থাপন করেন এবং নিজস্ব পরিশ্রমের দ্বারা আজ কোটিপতি হয়ে যান! অ্যামাজন ডট কম আজ শুধু আমেরিকাতেই নয়, পুরো বিশ্বের সবথেকে বড় অনলাইন ভিত্তিক খুচরা বিক্রেতা কোম্পানি। বেজস এর বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ৬ হাজার ৬২০ কোটি ডলার!

আশা করি, জ্যাক মা ও জেফ বেজসের জীবনের গল্প আপনাকে নতুন ভাবে ভাবতে শেখাবে। কিভাবে ঘুরে দাড়াতে হয় তা যদি একবার শিখতে পারেন তাহলে ধরে নেন আপনি সফলতার পথে এগুচ্ছেন।

আরো পড়ুন- স্মার্ট ব্যবসা আইডিয়া ও মার্কেটিং করার কৌশল জেনে উদ্যোক্তা হোন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *