হাতের লেখা সুন্দর করার উপায় কি? হাতের লেখা কিভাবে ভাল করা যায়? এ নিয়ে তোমরা অনেকেই জানতে চেয়েছ আমাদের চ্যানেলে। আশা করি, তোমাদের সব প্রশ্নের জবাব পাবে এই লেখাতে। যদিও হাতের লেখার উপর অতিরিক্ত কোনো মার্কস নেই। তবুও সুন্দর হাতের লেখা শিক্ষকের মন কাড়ে।
আর মন কাড়লে অটোম্যাটিক মন বলে এই ছাত্র বা ছাত্রীটি মনে হয় ভালো স্টুডেন্ট, দেই একটু বেশি করে নম্বর। আমাদের দেশের অনেক শিক্ষক/শিক্ষিকা আছেন, যারা খাতা ভালভাবে না দেখে সুন্দর হাতের লেখার উপর মার্কস দেন। এটি অপ্রিয় হলেও সত্য। তাই নিশ্চিত ভাল ফলাফল পেতে আর বন্ধু মহলে বাহবা পেতে হাতের লেখার জুড়ি নেই। চল তবে জেনে নিই, হাতের লেখা সুন্দর করার বেশ কিছু টিপস।
টিপস ১: পছন্দের হাতের লেখা সিলেকশন
যে কারোর হাতের লেখা শেখা সম্ভব। তবে যে হাতের লেখাটা সবচেয়ে বেশি মন কাড়ে সেটা দ্রুত শেখা সম্ভব। কারণ সেটার জন্য মনের ভিতর একটা আনন্দ ও সন্তুষ্টি থাকে। তোমার ক্লাসে কিংবা কোচিংয়ে এরকম একজনকে সিলেক্ট কর, যার হাতের লেখা শিখতে পারলে তুমি নিজেকে ধন্য মনে করবে।
টিপস ২: লাইন টানা খাতায় লিখা
হাতের লেখা সিলেকশন হয়ে গেলে লাইন টানা খাতা, ডায়েরী বা প্যাড কিনতে পারেন। তারপর যার হাতের লেখা সিলেক্ট করেছ, তার কাছে অ থেকে ঔ, ক থেকে চন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত লিখে নাও। ইংরেজি হলে এ টু জেড পর্যন্ত প্রতিটি বর্ণ আলাদাভাবে লিখে নাও। তারপর সেটার ২০/২৫ টা ফটোকপি করে রাখ।

এখন প্র্যাকটিসের পালা। প্রচুর প্র্যাকটিস করতে হবে। প্রথমে তোমার বন্ধুর লিখে দেয়া বর্ণগুলোর উপর ওভার রাইটিং কর। যতক্ষণ না পর্যন্ত সেটা পুরোপুরি আয়ত্তে আসে।
এভাবে একদিনে ৫টি বর্ণ ওভার রাইটিং করে সেটি আবার খাতায় আলাদা করে লিখবে। তারপর বর্ণগুলো আয়ত্তে আসলে বন্ধুর কাছে গিয়ে এবার মজার মজার কিছু বাক্য লিখে নাও। যেমনঃ আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি, তুমি আমার নিঃশ্বাসে আর বিশ্বাসে। এরকম মজার মজার বাক্য লিখলে অটোম্যাটিক মনযোগ আসবে।
আর এসব মজার রোমান্টিক কথা একবার কেন একশবার লিখতেও প্রস্তুত অনেকেই। কি আর করবা বল? আমাদের মনটাই এরকম, খালি রোমান্টিকতা খুঁজে। যাই হোক, এভাবে বাক্যগুলোর উপর ওভাররাইটিং কর। এবং তা দেখে দেখে নিচে আলাদাভাবে লিখে অনুশীলন কর।
টিপস ৩: সময় দেয়া
হাতের লেখা শেখার জন্য কোনো ট্যালেন্ট লাগে না। একটু সময় নিয়ে ধৈর্য্য সহকারে প্র্যাকটিস করলেই তা আয়ত্তে চলে আসে। যে যত বেশি প্র্যাকটিস করবে সে তত দ্রুত আয়ত্তে নিয়ে আসবে। পুরো বিষয়টি কম্পিউটার কীবোর্ড টাইপিং শেখার মত। নিয়ম জেনে নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে।

তাই ফ্রি সময়ে বোরিং লাগলে গান শুনতে শুনতে প্র্যাকটিস করতে পার। নিজের ভালোলাগা থেকেই কাজটা করতে হবে। জোর করে মনের বিরুদ্ধে গিয়ে নয়।
আর প্র্যাকটিস করার সময় বাসা কিংবা স্কুলের যে কোন কাজেই ঠিক ঐভাবে লেখার চেষ্টা কর যেভাবে শিখতেছ। হোক সেটা বাজারের লিস্ট কিংবা কোন প্রয়োজনীয় বা অপ্রয়োজনীয় লেখা।
টিপস ৪: সুন্দর হাতের লেখা
সুন্দর হাতের লেখা মানে শুধু সুন্দর বর্ণের বাক্য নয় বরং সাজানো গোছানো বিন্যাসে সাজানো। যেমন-প্রতিটি বাক্যের বর্ণ এক সাইজের হবে। লাইন সোজা ও সমান্তরাল হবে। এক লাইন থেকে আরেক লাইনের দূরত্ব নূন্যতম ০.৫ সেমি হবে। একটি শব্দ যেন আরেকটি শব্দের সাথে লেগে না যায়।

অর্থাৎ একই লাইনে ভিন্ন ভিন্ন শব্দের মাঝে যেন সমান দূরত্ব বজায় থাকে। যাদের লাইন বাঁকা হয় বা উঁচু নিচু হওয়ার সমস্যা আছে, তারা লাইন টানা খাতায় কিছুদিন প্র্যাকটিস করার পর সাদা পাতায় লেখার সময় নিচে স্কেল ধরে কিছুদিন প্র্যাকটিস করলে ঠিক হয়ে যাবে। সেই সাথে লেখার সময় হাতকে নাইনটি ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে ডানদিকে সরালে লেখা একেবারেই সোজা হয়ে যাবে।
টিপস ৫: পরীক্ষার খাতায় লেখা নিয়ে সতর্কতা ও টিপস
- লেখা অবশ্যই স্পষ্ট হতে হবে।
- প্রতিটি লাইন সোজা ও সমান্তরাল হতে হবে এবং এক লাইন থেকে অপর লাইনের ন্যূনতম গ্যাপ ০.৫ সেমি থাকতে হবে।
- ভুল হলে একটানে মাঝ বরাবর কেটে দিতে হবে। কোনভাবে ঘষামাজা করা যাবে না।
- পরীক্ষায় পয়েন্ট ও প্যারা করে লিখলে বেশি মার্কস পাওয়া যায়।
টিপস ৬: কলম ধরার নিয়ম
কলম কে, কিভাবে ধর সেটা বড় বিষয় নয়। আসল বিষয় হল কলমের উপর বেশি জোর দেয়া যাবে না। কারণ বেশি জোর দিলে আঙ্গুল ব্যথা হবে এবং দ্রুত লিখতে পারবে না। তাই স্বাভাবিকভাবে তিন আঙুল দিয়ে কলম ধরার অভ্যাস কর।

জেলপেন বা বেশি ওজন ওয়ালা কলম দিয়ে বেশিক্ষণ লেখা যায় না। তাই বাজারে পাওয়া যায় এমন ৫ টাকা দামের কলমগুলো যেগুলো তোমার ধরতে সুবিধা হয় সেগুলো ব্যবহার করতে হবে।
এই ছিল হাতের লেখা ভাল করার সেরা ৬টি টিপস। তো কেমন লাগল আমাদের এই টিপসগুলো। তা কমেন্ট করে জানাও। এগুলো ছাড়াও আরো ভালো কোনো টিপস তোমাদের জানা থাকলে তা কমেন্ট বক্সে সবার সাথে শেয়ার করতে পার। ভিডিওতে লাইক দিয়ে আমাদের অনুপ্রেরণা দিও এবং শেয়ার করে বন্ধুদেরও জানার সুযোগ করে দিও।
আরও পড়ুন- সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার নিয়ম জেনে পুরো ১০ পান
ভালো লাগলো আপনার পোষ্ট গুলো ।
tnx